

মোঃ সরোয়ার হোসাইন লাভলু : ২৪ আগস্ট ২০২২ ইংরেজি তারিখ থেকে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার লক্ষ্যে সারাদেশে নতুন অফিস সূচী অনুযায়ী সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। উক্ত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ২৩ শে আগস্ট ২০২২ ইংরেজি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট সকাল ৮ টা থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত চালু করার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। উক্ত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আজ ২৫ আগস্ট ২০২২ ইংরেজি তারিখ থেকে নির্ম্ম আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা সকাল ৮ ঘটিকা থেকে এবং এজলাস কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা সকাল ৮:৩০ মিনিটের সময় থেকে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী চট্টগ্রামের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন্নাহার রুমি গত ২৪ আগস্ট ঘোষণা করেন আদালতের নতুন কার্যক্রম সংক্রান্তত বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় । বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সকাল ৮:৩০ ঘটিকার থেকে এজলাসের কার্যক্রম শুরু হবে, সি আর মামলার ফাইলিং ৯ টা ৩০ মিনিট থেকে এবং পুলিশ ফাইল এর কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা সকাল ১০:০০ থেকে এবং বিচার আমল ও অন্যান্য বিচারিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা সকাল ১১ টা থেকে। ঠিক সেই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ২৫ আগস্ট সকাল ৮:৩০ মিনিটের সময় যাচ্ছে ওঠেন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন নাহার রুমি। এ সময়ের মধ্যে যে সকল বিজ্ঞ আদালত উপস্থিত হন তাদের সকলকে মিষ্টিমুখ করানোর মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম শুরু করেন তিনি। “তিনি বলেন আপনারা সকলে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সঠিক সময়ে আদালতে উপস্থিত হয়েছেন বিষয়টি আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে, তাই আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য সামান্য মিষ্টি মুখের আয়োজন করেছি। সকল বিজ্ঞ আইনজীবীরা মিষ্টিমুখ করলে আমি আন্তরিকভাবে খুশি হব।” এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সদস্য এডভোকেট এ কে শাহজাহান বলেন ” আদালতের কার্যক্রম মিষ্টিমুখের মাধ্যমে শুরু হওয়া একটি নজীর বিহীন এবং সুন্দর দৃষ্টান্ত।” আদালতের কার্যক্রম ৮ঃ৩০ মিনিটের সময় শুরু করলে চট্টগ্রাম জেলা সমিতি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আবু মোহাম্মদ হাসেম চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর এজলাসে এসে উপস্থিত হন এবং তিনিও মিষ্টিমুখ করেন, মিষ্টিমুখ করানোর জন্য চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং চট্টগ্রাম জেলা সমিতির পূর্বের সিদ্ধান্ত হরতাল জনিত কারণে অনুযায়ী আদালতের কার্যক্রম দেরিতে শুরু বিষয়টি অবগত করলে, তিনি হরতালজনিত কারণে ২৫ আগস্ট ২০২২ ইংরেজি তারিখের জন্য আদালতের কার্যক্রম সকাল দশটা থেকে শুরু করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন এবং পরবর্তীতে তিনি এজলাস থেকে নেমে অন্যান্য দাপ্তরিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে সকাল ঠিক ১০:০০ টায় পুনরায় আদালতের কার্যক্রম চালু করেন এবং অন্যান্য সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটগণ একই সময়ে আদালতের কার্যক্রম শুরু করেন। উল্লেখ্য যে চট্টগ্রামের এই চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন্নাহার রুমি জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসীকে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা এবং বিচার কাজে আনন্দময়, পরিবেশ সৃষ্টিতে অনন্য ভূমিকা রাখছেন এবং নতুন নতুন কার্যক্রম হাতে নিচ্ছেন। তিনি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রত্যেকটা বিচারক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে মাস শেষে প্রণোদনা হিসেবে কাজের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করেন । টাকার অংকে এ পুরস্কার অনেকক্ষেত্রে নগণ্য হলেও এ পুরস্কার প্রদান করেন উনার নিজস্ব তহবিল থেকে। তিনি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অধীন সি আর কোট , পুলিশ কোর্ট , জুডিশিয়াল সেকশন, মাদক মামলা, নন জি আর সেকশন এর প্রত্যেকটা কাজের তদারকি করছেন তিনি একা। চট্টগ্রামের মেয়ে এই কামরুন্নাহার রুমি, চট্টগ্রামে আছে উনার পরিবার-পরিজন, কিন্তু সকাল ৮য় অফিসে এসে বাসায় যান রাত নয়টায়, কখনোবা দশটায় , আবার কখনোবা আটটায়। একজন মহিলা বিচারক হিসেবে অনেক সময় পুরুষের চেয়েও বেশি কাজ করে এবং মামলা নিষ্পত্তিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছেন। বিগত ২০২০ সালের করোণা মহামারী থেকে সারাদেশে যখন মামলাজট বাড়তে থাকে তখন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চট্টগ্রামে এই মামলার জট কমতে থাকে। সারাদেশে উনার ম্যাজিস্ট্রেটসীতে সবচেয়ে বেশি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। দেশের মহামারী করোনাভাইরাস ও ওমিক্রন এর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের সম্মুখে ডিসপ্লে বোর্ড এর মাধ্যমে সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাস সচেতনতা মূলক প্রচার চালিয়ে ছিলেন তিনি। উল্লেখ্য যে তিনি মামলা নিষ্পত্তিতে উৎসাহিত করার জন্য যে সকল মামলা আপোষে নিষ্পত্তি করেন সে সকল পক্ষ থেকে তিনি একটি করে চকলেট দিয়ে ভালবাসার বন্ধন আরো বাড়িয়ে দেন। এটি যেন চকলেট নয় পারিবারিক বন্ধন অটুট করার একটি বাহন। উনার আদালতে ছোট কোনো শিশু দেখলেই তিনি প্রত্যেকটি শিশুকে একটি করে চকলেট দেন, যেটা নজর কাড়ে আদালতে সকল আইনজীবী ও বিচারপতি জনগণসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের। এসব বিষয়ে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন্নাহার রুমীর সাথে সরাসরি কথা বললে “তিনি জানান আমি আমার ম্যাজিস্ট্রেসিতে সবসময় স্বচ্ছ জবাবদিহিতা এবং গতিসম্পন্ন রাখতে এ সকল কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকি এবং বিজ্ঞ আইনজীবীরা আমাদের বিচার কাজের অংশ উনারা খুশি থাকলে আদালতের কার্যক্রম চালিয়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার সহজ হয়।”
আপনার মতামত লিখুন :